বা এই আপনি বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন আপনার মনে হলো ঘরের ভেতরে যত গুলো চাবি দিয়েছিলেন হঠাৎ সব খুলে গেলো?
আসুন আজকের কিছু ঘটনা সাথে সমুখীন হয় যে গুলো আমাদের সাথে প্রতিনিয়ত ঘটে থাকে । যদিও এই সব কিছু স্বাভাবিক কিন্তু যদি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে ওটা আসলে কি?
প্যারানরমাল একটিভিটি....?
যাকে আমরা বলি অস্বাভাবিক কার্যকলাপ !?
বা ভৌতিক কাহিনী.?
আমি তখন সেই কলেজের আর প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হবার দুদিন পরেই তখনও আমি বাড়ি যাই নি।ভেবেছিলাম যাবো কাল বা পরশু ,কিন্তু আমার সাথে যে এই ভাবে কিছু ঘটে যাবে তার আন্দাজ ছিল না ।
সেই দিন দুপুরে মাসি বলল আজকে তো সুধুনতোমারা কয়েকজন আছো সেরম কিছু খাবার আর বানাবো না ,
ভালো করে কষিয়ে একটু মুরগির ঝোল আর ভাত করে রাখছি , রাত্রে আসবো না ।
রুটি পাঠিয়ে দেবো তোমার দুপুরে রাত্রের মাংস টা নিয়ে রেখো ।
তোমাদের বাপু জানিনে পরীক্ষা শেষ হবার পর ও আমাকে একটু রেহাই দিচ্ছ না ।একটা দিন যে আমি বিশ্রাম নেবো তার জো নেই ...
মাসি এরম কথা বলেই থাকে , কিন্তু তাতে তেমন একটা লাভ জনক ব্যাপার কিছু থাকে না । তাও মাসি অরূপ কথা বললেই রান্না টা বেশ ভালই করেন।
আমরা বেশি কেউ ছিলাম না ওই এত বড়ো হোস্টেল এ মাত্র ছয় জন এ আছি ।
কিছু দিন ধরে রোজ দুপুরে মাসীর চিৎকার শুনি আজকে ফ্রিজ থেকে এটা শেষ হয়ে গেছে , তো কালকে হল ঘরের সব বাসন পরে গিয়েছে , আবার মাসি বলছিল যেই ঘরে আমরা বসে খাই ওই ঘরে নিচের ঘর থেকে উনি নাকি কিসের শব্দ পাই , কখনও কখনও তালা ভাঙার শব্দ পাই ,
আর একটা কথা মাসি বেশ বলে থাকে রান্না ঘরে নাকি কোনো প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখতে পারেনা ।
মাসীর রোজকারের এই কথা গুলো শুনতে শুনতে আমরা অভ্যস্ত।
আজকে মাসি রান্না করে চলে গেছে প্রায় একটা নাগাদ,পুরো হোস্টেল যেনো স্তব্ধ।কোনো চিৎকার চেচামেচি না , কোনো কোলাহল না,
আমরা যে যার রুমে নিজেদের মতো কাটাচ্ছি,তখন প্রায় হবে দুটো হবে , সেলিমা আমার রুম আসে বলল আজ কেমন যেনো ফাঁকা ফাঁকা লাগছে বল ,
সেলিমা আমার ক্লাস এ পড়ে, সেম ক্লাস ও বাড়ি যাবে বললো পরের দিন ।
চল চল মাংস টা ভাগাভাগি করে আনি আজকে তারাতারি খেয়ে নিয়ে আমাকে আবার বেরোতে হবে , তোরা সবাই কাল সাবধানে বাড়ি ফিরিস , আবার দেখা হবে কয়েকদিন পর। বৃষ্টি প্রথম থেকেই খেতেই ভালো বাসে আমরাই ভাবলাম কি বা হবে বসে বসে তাহলে খেয়েই নিবো ।
সিঁড়িতে উঠার সময় আমার মনে হলো কেউ যেন আমাকে পেছন থেকে টানছে , আমি ও ভাবলাম হয়তো আমার বন্ধুরাও হবে পেছন ফিরে তাকাতেই দেখি কেউ নেই, একটু দাড়িয়ে ভেবে দেখলাম হয়তো আমি ভুল ভাবছি আর কিছু না ভেবেই আমি উপরে উঠলাম ।
আমরা সবাই মিলে আড্ডা দিতে দিতে মনে হলো কেউ যেন দরজায় বাড়ি মারছে , প্রথমে একটু আস্তে তারপর থেকে অনেক জোরে জোরে মনে হচ্ছে যেন কাউকে রান্না ঘরের নিচের ঘরটাই বেঁধে রেখেছে আর সে অনেক জোরে শব্ধ করছে .
কেউ কিছু বুঝতে না পেরেই আমরা ছুট্টে গিয়ে ওই ঘরের দরজা খুলে দেখি!
কী !
কি এটা।
পড়ে আছে ঘরের মেঝেতে কিছু বাসন, একটা বিছানায় একটা ব্যাগ কিছু বই সুন্দর করে গুছানো।
আমরা অবাক :
এখন আর কোনো শব্ধ নেই।
কে কে দরজা খুলল কে এত বড় সর্বনাশ করলো ?
বলতে বলতে আমাদের দরজায় পাহারাদার কাকা এসে দাঁড়ায়।
বয়স হবে প্রায় সত্তর ছুঁই ছুঁই।
বেরিয়ে এসো বেরিয়ে এসো বলছি সবাই কে .
তারাতারি সে ওই দরজা বন্ধ করে দেই।
আমরাও সবাই চুপ করে মেঝেতে বসে পরলাম
কাকা কি হয়েছিল?
এটা কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে কাকা।
কাকা যা বলল তার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না ।
কয়েক বছর আগে এই ঘরের কয়েকজন পড়ুয়া ছিল ।
তার মধ্যে মিনি ছিল খুব মিষ্টি..
যেমন মিষ্টি নাম তেমন মিষ্টি ব্যবহার,
যেনো কথার ফুলঝুরি ।
খেতে ভালোবাসতো খুব , আমাকেই এটা ওটা দিত।
একদিন দুপুরে তার শরীরটা খুব একটা ভালো না থাকার কারণে সে কলেজ যেতে পারে নি , আর সেটাই তার কাল ছিল।
মাসি তখন সকালের খাবার করে দিয়ে চলে যায় বাড়ি , ও বলে আমার শরীর টা ভালো নেই মাসি আমার জন্য কিছু বানিও না , আমি দুপুরে একটু ম্যাগী বানিয়ে নেবো ।
ছোট্ট মিনি কাউকে না দেখেই নিজেই যায় রান্না ঘরে আর সে রান্না করতে করতে কোনো ভাবে তার জামাই আগুন ধরে যায় ।।
যখন তার চিৎকারে আমরা গিয়ে দাঁড়ায় সব টা তখন ই শেষ হয়ে গেছিল ।
সিনথেটিক জামা টা আর সে শরীরে যেনো লেপ্টে গেছে , বালতি বালতি জল ডালার পর যখন আগুন নিভে তার ঘরে এনে সোয়াই তখন সব কিছু শেষ ।
তারপর থেকে আর এই ঘরে কেউ আসেনি, অনেক সময় কেটে গেছে আমরা কিছু শব্দ ওর পেতাম , ওই ওর যখন খিদে পেতো দুপুরে ও খেতে চাইতো ।দরজা খুলে বেরোতে চাইতো ।
এটা সত্যি না আমাদের মনের ভুল জানিনা তবে খিদে পেটে যে মারা যায় , তার মৃত্যু টা কি সত্যি স্বাভাবিক হতে পারে ?
আপনারাই বলুন না?
সব শব্দ কি স্বাভাবিক হয় ?

No comments:
Post a Comment