ভয়ংকর অভিজ্ঞতা - অতীত এর পুড়ে যাওয়া এক অজানা রহস্য
সকাল থেকে অনেক বৃষ্টি....
আজ শনি বার, অফিস ছুটি,
আমি আর আমার বন্ধু নীতিস থাকি একটা ভাড়া বাড়ি নিয়ে থাকি, দুজনের বন্ধুত্ব টা যদিও এই বাড়ি ভাড়া নেবার পর পর ।
সূচিপত্র (Table of Contents)
- ভূমিকা ও পরিবেশ
- অজানা গুজব ও প্রতিবেশীদের অভিজ্ঞতা
- বৃদ্ধার সতর্কবার্তা
- নীতীশ-এর অনুপস্থিতিতে একলা দিন
- অস্বস্তি ও অদৃশ্য উপস্থিতি
- অজ্ঞান অবস্থা ও জাগরণ
- বাড়ির মালিকের মুখে ঘটনার সত্যতা
- মুক্তির ব্যবস্থা ও শেষ ভাবনা
এই সরকারের অধীনে চাকরি পাওয়া টা অনেক কঠিন,
তাই আমি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করি , নীতীশ ও আমার সংস্থায় কাজ করে ।
এই বাড়ি টাই আমরা প্রায় ছয় মাস হলো আছি এমন কোনো পরিস্থিতি আসবে এটার জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম না।
এই বাড়ির সমন্ধে কিছু কথা শুনেছিলাম ঠিকই কিন্তু আমরা বিশ্বাস করিনি।
যখন আমরা অফিস বেরিয়ে যেতাম তখন নাকি এই ঘর থেকে কিছু শব্দ পাড়া র লোক শুনতে পেতো।
কেউ যেন বলছে একা রেখে যেও না আমায়, নিয়ে চলো.....
নিয়ে চলো আমায়.....
সত্যি বলতে এটা আমরা কেউ বিশ্বাস কি করতাম না ,
ভাবতাম দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক অজানা ছেলে হয়তো রাখতে চাইনা এই পাড়ায়।
তাই কথাটার কোনো দিন সে ভাবে গুরুত্ব দেইনি।এই ভাবেই প্রায় ছয় মাস কাটলো।
আজকেই একজন মহিলা একটু বয়স্ক বছর 70 হবে আমাকে বললেন এই বাড়িতে এক ছায়া আছে ,
অজানা ছায়া, চোখে দেখা যায় না ।
সাবধানে থেকো বাবা সাবধানে থেকো ।
আমি বললাম এসব এর ভয় করিনা আমি ঠাকুমা।
সাবধানের মান নেই বাবা...
এই বাড়ির মালিক বলতে আমরা এত দিন একজন ভদ্র লোকেই দেখেছি । বাড়ি নেবার সময় শুনেছিলাম ওনার ছেলে বাইরে চাকরি করেন । বউ মারা গিয়েছে শুনেছিলাম কিন্তু কোনো দিনও তার ইতিহাস জানতে চাইনি।
মাসের দ্বিতীয় শনি বার আজ তাই নীতীশ বাড়ি গেছে , আমার এই সপ্তাহে শরীর টা ঠিক যাচ্ছে না অগত্যা আমাকে এই বারের শনি বার টাই আমাকে এখানেই থাকতে হচ্ছে , এই বৃষ্টি এর দিনে আমার ও যদিও একা একা থাকতে ইচ্ছে নেই কিন্তু কি আর করা যায় ।
আমি ও বৃষ্টির দিনে দুপুরে জমিয়ে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমোতে যাবো হঠাৎ দেখি রান্না ঘরের পাশের জানালায় একটা কালো বিড়াল, প্রথমে যদিও একটু ভয় পেয়েছিলাম তারপর দেখি ওটা চলে গিয়েছে ।
তখনও অবধি আমার কাছে এটা অজানা একটা রহস্য লাগাচ্ছে ।
জানিনা কেনো তারপর থেকেই। আমার কেমন জানি একটা অস্বস্তি হচ্ছে শরীরে , ঘুম ও আসছে না , আর এই বৃষ্টি বদল নিজের শরীর ও কেমন জানি চাপা অস্বস্তি আসে যাচ্ছে , হয়তো সারাদিন এই বদ্ধ ঘরে থাকার কারণে এটা হচ্ছে ।
চুপ করে শুয়ে শুয়ে হঠাৎ আমার মনে হলো কেউ যেন এই ঘরে এসেছে বুঝতে পারছিনা কাউকে তো দেখতে পাচ্ছিনা , কিন্তু কারোর উপস্থিতি ঘটেছে এটা আমি বুঝতে পারছি ।
কে?
কেউ কি এসেছো আমার ঘরে?
কে?
আমি দুবার ডাক দিয়ে কাউকে দেখলাম না ।
নিজের মনের মধ্যে একটা ভয় তৈরি হতে শুরু করেছে , তাহলে কি সত্যি কেউ আসে আমরা কাজে যাবার পর আর আজকে আমি এখানে থাকায় সে কিছু বলতে পারছে না।
ছোট্ট ছোট্ট পায়ের আওয়াজ আর তাতে যেনো নূপুরের শব্দ কে কে ওখানে ?
আমি চিৎকার করতে যাবো এমন সময় আমার মনে হলো কেউ আমাকে বলছে খুলে দাউ এই দরজা খুলে দাউ আমি মুক্তি চাই আমি মুক্তি চাই ।
এত ধোঁয়ায় আমি শ্বাস নিতে পারছিনা , মা মা আমায় বাঁচাও মা ।আমি পারছিনা ।
এত ধোঁয়া এত বদ্ধ তা আমি ও যেনো এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে মাটি তে লুটিয়ে গেলাম ।
যখন আমার ঘুম ভাঙ্গলো দেখলাম আমি আমার বিছানায় শুয়ে আছি , নীতীশ আমার পাশে বসে মাথায় হাত বোলাচ্ছে, আর বাড়ির মালিক আমার সামনে একটা আরামকেদারাই বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
আজ আমাকে একটা সত্যি কথা বলুন ?
কি আছে এই ঘরে , কে আসে বলুন আমায় সব ঘটনা আমায় খুলে বলুন ।
দেখো বাবা আজ একটা সত্যি কথা বলি , এই বাড়ি তে একটা সময় আমি আমার বউ, আমার ছেলে এবং আমার এক ছোট্ট কন্যা সন্তান ছিলাম , খুব ভালো ভাবেই আমাদের সংসার জীবন চলছিল , আমার মেয়ে আমাকে তার ছোট্ট ছোট্ট হাতে যখন আদর করতো সব থাকে সুখী মানুষ আমি ছিলাম , আজ আর কোনো কিছুই নেই ।
কি ঘটে ছিল বলুন আমায় আমাদের সব টা বলুন .....
এরম ই এক বৃষ্টটির দিনে আমি তখনও অফিস এ, আমার ছেলেটা বরাবরই একটু দুষ্টু টাইপ এর। ওর বয়স তখন আট বছর হবে , আর ওর বোনের বয়স হবে চার বছর, ছোট থেকেই পড়াশোনার প্রতি ওর অনেক ভয়,
বাবু আমি সন্ধ্যে দেখতে যাচ্ছি , তুমি বই নিয়ে পড়তে বস আমি আসে পড়া ধরবো ওর মা ওকে পড়তে বসার আদেশ দিয়ে ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে যায় সন্ধ্যে দিতে ।
ওই যে জায়গা টা দেখো ওখানেই ওর মা ঠাকুর পাতা থাকতো , সন্ধ্যার প্রদীপ নিয়ে যখন ওর মা আরতি করছে সেই সময় বাবু দুষ্টুমির চলেই এই ঘরের দরজা বাইরে থাকা আটকে দেই ।
তারপর ...
তারপর তারপর সব টা শেষ ....
আমি আসার আগেই সব টা শেষ হয়ে গেলো , আমি বাড়ি আসে ওদের এর দেখতে পাইনি ।
কি হয়েছিল বন্ধ ঘরে...
বন্ধ ঘরে কি হয়েছিল সেটা আজও অজানা ...
হয়তো বদ্ধ ঘরে ঝড়ো হাওয়ার কারণে কোনো ভাবে ওই প্রদীপ আর আগুন ওদের মায়ের গায়ে লাগে যায় তারপর আমার মেয়ের গায়ে ...
ওই ছোট্ট হাতের আদর আর আমার কপালে জোটেনি , ওর মায়ের হাতের বানানো রুটি তরকারি ও আমি আর পাইনি।
বাবু...
বাবু কোনো চাকরি করেনা নীতীশ , এই কুড়ি বছর ধরে কোমাই পড়ে রয়েছে ,
ডাক্তার বলেছে আর কোনোদিন ও কোমা থেকে ফিরবে না ।
একটা ছোট্ট ভুল আমার পুরো সংসার টাই কেড়ে নিয়েছে , এই সত্যি আমি কাউকে বলতে পারিনি আজ অনেক টা হালকা লাগছে , তোমাদের না বলে আমি এই ঘরে থাকে বলে আমি ভুল করেছি , শাস্তি দিতে চাইলে দিতে পারো বাবা ...
আমায় একটু ঘরে দিয়ে আসবে বাবা , আমি শরীর এ দুর্বলতা অনুভব করছি ।
কাকামোসাই আমরা আছি আপনার পাশে, আপনি ওনাদের মুক্তির ব্যাবস্থা করুন , আমরা সব আয়োজন করে দেবো ।
কখনোই কোনো শারীরিক বা আসারীরিক আত্মা বদ্ধ থাতে চাই না ।
মুক্ত অবস্থায় থাকতে চাই.....

No comments:
Post a Comment