ভূমিকা
একটা বৃষ্টিভেজা রাত, খারাপ হয়ে যাওয়া গাড়ি, একা পথ চলা – আর এক রহস্যময় বাড়ি।
সব কিছুই যেন এক দুঃস্বপ্নের শুরু।
এই গল্পে রয়েছে ভয়, রহস্য এবং অতীতের এক অভিশপ্ত ঘটনা।
চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই রাতের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার কথা।
---
আকস্মিক বিপত্তি – গাড়ির খারাপ হওয়া
কাল ছিল আমার কলেজের এক বন্ধুর বিয়ে।
ছয় বছর আগে আলাপ হলেও সম্পর্কটা আজও অটুট।
বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে ফেরার পথে হঠাৎ শুরু হলো ঝড়-বৃষ্টি।
তীব্র বাতাস আর বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে ভয় জমে উঠল মনেও।
এই অবস্থায় গাড়ি চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।
গাড়ি থামিয়ে পেছনে তাকাতেই দেখা গেল একটা পুরনো বাড়ি, উঠোনে টিমটিমে আলো।
এই এতদূর এসে আগে তো চোখে পড়েনি! হয়তো খেয়াল করিনি।
---
অচেনা সেই বাড়ি
বৃষ্টির ভয়ে আশ্রয়ের খোঁজে সেই বাড়ির উঠোনে গিয়ে ডাক দিলাম—
“কেউ আছেন? একটু আসবেন দয়া করে?”
একজন প্রায় সত্তর বছর বয়সী বৃদ্ধা দরজা খুললেন।
আমি খুব বিনয়ের সাথে বললাম,
“আজ রাতটা থাকতে দেবেন কি? এই ঝড়বৃষ্টিতে বাড়ি ফেরা সম্ভব নয়।”
তিনি স্নেহময় কণ্ঠে বললেন,
“আয় মা, ভেজা শরীরে বাইরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?”
ভেতরে আয়।
অতিথিপরায়ণতা নাকি কিছু ভিন্ন?
আমার পুরো শরীর ভেজা, টপ টপ করে জল পড়ছে ,
ভিজে শরীরের জন্য আমাকে তিনি একটা শাড়ি দিলেন, বললেন নে পড়ে নে , আমি ও কিছু না বুঝেই ওটা পরে নিলাম, বিয়ে বাড়ীর জন্য চুলে আটকানো খোপার মালাটাও খোলা হয় নি, আমাকে দেখতে যেনো নতুন বউ আর মতোই লাগছে, উনি আমার জন্য গরম দুধ ও মিষ্টিও আনলেন।
শরীর তখন ক্লান্ত, ফোনে চার্জ ও শেষ, বাইরের ঝড় আরও ভয়ানক। আমি আমি একটু ইতস্তত হলাম ঠিকই কিন্তু খেয়ে নিলাম,
তিনি আমাকে উপরের ঘরে শুতে দিলেন।
কিন্তু ঘুম আসে না, জানালার দিকে তাকিয়ে শুধু ভাবছিলাম – কখন ভোর হবে?
তখনই শুরু হলো বিভীষিকা...
বাসর রাতের আতঙ্ক – কে যেন ছুঁয়ে যাচ্ছে!
দমকা হাওয়ায় হ্যারিকেনের আলোটা কমে এলো।
অস্বাভাবিক ঠান্ডা, শরীর ভারী হয়ে যাচ্ছে, অন্য রকম অনুভুতি হচ্ছে , শরীর ভারী লাগছে, যেনো ঘরে কারো উপস্থতি মনে হচ্ছে, পায়ের উপর থেকে কাপড় যেন সরে যাচ্ছে নিজে থেকেই। শাড়ি ঠিক করতে যাবো ,হাত তুলতে পারছি না, কেউ আমার হাত চেপে ধরেছে!
চিৎকার করে যে কাউকে ডাকবো তাও পারছিনা– কেউ আমার মুখ চেপে ধরেছে!
শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ছে, বিছানায় আটকে গেছে আমার শরীর, প্রচণ্ড জোরে আমি তাকে ধাক্কা দেবো,পারছি না।
কি হচ্ছে আমার সাথে,
কে যেন মিলিত হবার চেষ্টা করছে – কে সেটা?
রহস্যের উদঘাটন – দূর্জয়ের আগমন
হঠাৎ দরজা ভেঙে পড়ার মতো আওয়াজ।
এক মুহূর্তে হালকা লাগলো শরীর, কারো উপস্থিতি বিদায় নিলো যেন।
প্রচণ্ড ক্লান্তঃ
🎧 এখন আপনার প্রিয় বাংলা গল্প শুনুন, পড়ার ঝামেলা ছাড়াই! Audible ফ্রি ট্রায়াল নিয়ে আজই শুরু করুন।
সুমি....
চোখ খোলো সুমি ...
দেখো আমি আসে গেছি...
চোখ খুলে দেখি – দূর্জয়! আমার প্রেমিক।
আমার মাথা ওর কোলে, ও মাথায় হাত বোলাচ্ছে।
আমি ভয়ে জাপটে জড়িয়ে ধরলাম তাকে।
তখনি চোখ গেল দেয়ালে টাঙানো ছবিতে –
এক সদ্য বিবাহিত দম্পতির ছবি, তার পাশেই মালা পরানো সেই একই জুটির।
অতীতের অভিশাপ – আগুনে পুড়ে যাওয়া ভালোবাসা:
দূর্জয় বলল,
“তুমি জানো এই বাড়ির গল্প?
গল্প...
হ্যাঁ....
এটা এক আগুনে পুড়ে যাওয়া বাসর ঘর।
বছর কয়েক আগে এই বাড়ি তে একটা বিয়ে বাড়ি হয়েছিল, ওই যে দেখছ ছবির দিকে হাত তুলে দূর্জয় দেখালো , বাসর রাতের দিনও ঝড় বৃষ্টি হয় , সুন্দর করে সাজানো বাসর ঘরে অনেক মোমবাতি দিয়ে সাজানো থাকে ,
দুই সদ্য বিবাহিতা দম্পতি যখন বাসর রাতে সুন্দর মুহুর্ত সামিল হচ্ছে সেই সময় দমকা ঝড়ে মোমবাতি পড়ে আগুন লেগে যায়।
নতুন দম্পতি এই ঘরেই পুড়ে মারা যায়।”
সেই দম্পতির বাসর রাতেই সব শেষ হয়ে যায়।
আজও সেই আত্মা?
লোক মুখে শোনা যায়,
যদি কোনো ২৫ বছর বয়সী মেয়ে এই বাড়িতে আসে,
তাকে এক সুদর্শন যুবক দেখা দেয়, আর বাসর রাত কাটাতে চায়।
আবার কোনো যুবক এলে এক রূপবতী কন্যা এসে বাসর রাতের স্বপ্ন দেখায়।
অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে চাই ।
শেষ কথা
আমি কিছু না বলে শুধু দূর্জয়ের সাথে বাড়ি ফিরে এলাম।
মা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করল –
“সুমি,
কোথায় ছিলি?
কত চিন্তা হচ্ছে জানিস, ফোন টাই যাচ্ছে না,
এই ঘরে আই...
ও আজকে অনেক ক্লান্ত, ওকে আজ আর কিছু বলো না মামনি,
চলো সুমি ভালো করে স্নান করে নাও,
একটু ভালো লাগবে,
তুমি একটু থেকো প্লিজ।
হ্যাঁ আমি আছি ।।
আমি স্নান করে নিচে আসলাম।
দুধ খাবি?” সুমি?
আমি উত্তর দিলাম –
আচ্ছা আসো আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি, ঘুমিয়ে পড়ো,
ভোরের আলো ফুটেছে, আমি ও ঘুমিয়ে গেলাম আস্তে আস্তে , অনেক বেলা হয়ে গেছে,
চোখ খুলে দেখি দূর্জয় ও আমার বিছানায় মাথা নুইয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে ,
ও ক্লান্ত...
No comments:
Post a Comment